আজকে আমার চইগাছ ব্যবহার করারা এর উপকারীতা নিয়ে জানব। এটি একটি খুবই গুরুত্ব গাছ । আমাদের বিভিন্ন ধরনের রোগ ভালো করে থাকে এই চইগাছটি । আসুন জেনে নিয়ে চইগাচ এর উপকাররিতা ।
![]() |
| চইগাছ ব্যবহার করারা এর উপকারীতা |
আগের দিনে মানুষ পাতলা পায়খানাকে স্বাভাবিক রাখার জন্য চই খেত। এটি আবার পানির পিপাসাও মেটাত। শুধু তাই নয়, যে অর্শ রোগী ঝাল খেতে পারেন তার জন্য চই একটি দারুণ মসলা ছিল। চই অর্শ রাগীকেও ভালো করতে সাহায্য করে। যাদের শূল রোগ অর্থাৎ পেট ব্যথার সমস্যা আছে, তাদের জন, দরকার চই খাওয়া। চই বায়ুবিকার এবং খাবারে অরুচিও দূর করে।
এটি শ্বাস, কাশি, গলাভাঙা ইত্যাদি অসুবিধাতেও ভালো কাজ দেয়।
চইগাছ অনেক বছর বাঁচে। শক্ত লতা, মূল থেকে গাছ বের হয়। এই গাছের পাত ৫-৭ ইঞ্চি লম্বা হয়। আর চওড়া হয় ২-৩ ইঞ্চি, ঠিক পান পাতার মতো। চইগাছের শেকড় খেতে ঝাল লাগে। বর্ষার শেষে এ গাছে ফুল ও ফল হয়। এর ফলকে বল হয় গজপিপুল।
চইগাছ থেকে ঔষধ বানাতে পুরো গাছ, শেকড় ও ফল ব্যবহার করা হয়। আমাশয়সহ কয়েকটি অসুখ সারাতে চইগাছ ভালো ফল দেয়। চই সহজেই অনেক অসুখের উপশম করে বলেই প্রাচীন কালের ভেষজবিদ বা কবিরাজদের কাছে চই| এর কদর ছিল বেশি।
চইগাছ ব্যবহার করারা এর উপকারীতা (The benefits of using teak):
রক্তস্বল্পতা :
অনেকে আছেন যারা কফ-পিত্তের দোষে ভোগেন। এতে করে গায়ে হাতে জ্বালা-পোড়া করে। বার বার পানির পিপাসা লাগে। পায়খানা পাতলা হয়, হাত-মুখ ফুলে যায়। মাঝে মাঝে নাকমুখ দিয়ে পানি ঝরে। এছাড়াও ঝিমুনি ও শরীরে অলসতা দেখা দেয়। এসব নিরাময়ের জন্য চই খুব উপকারী। প্রথমে চই গুঁড়া করে ১ গ্রাম হিসেবে সকালে ও বিকালে গরম পানিসহ খান।
এভাবে ৫ দিন খেলে দেখা যাবে রক্তস্বল্পতা কমে আসছে। কিছুদিন এইভাবে খেলে রক্ত পিত্তের | দোষ কমে আসবে।
এভাবে ৫ দিন খেলে দেখা যাবে রক্তস্বল্পতা কমে আসছে। কিছুদিন এইভাবে খেলে রক্ত পিত্তের | দোষ কমে আসবে।
জন্ডিস :
জন্ডিসে ভুগছেন এমন অনেক রোগীর রক্ত দূষিত হয়। এই রক্ত দূষণ কমাতে চই ব্যবহার করা যায়। প্রথমে আমলকি ভেজানো পানিতে আনুমানিক ১১ গ্রাম চই গুঁড়া মিশিয়ে সকাল-বিকাল দু’বার করে খান। এভাবে খেলে ৩-৪ দিন পর থেকে জন্ডিস রোগীর রক্ত দূষণ কমতে শুরু করে।
এছাড়া রাতে ৫/৬ টুকরো আমলকি ১ কাপ গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে ছেকে ওই পানি দু'বেলা খাওয়াও ভালাে। এতে জন্ডিস সেরে যাবে।
পেটের অসুখ :
পেটের অসুখ বর্ষার প্রথমে ও বসন্তকালে হতে দেখা যায়। এর লক্ষণ হচ্ছে- শরীর ভারি বোধ করা, আলসেমি লাগা, বমি বমি ইচ্ছা, ক্ষুধা কমে যাওয়া, অরুচি, পায়খানা অপরিষ্কার হওয়া ইত্যাদি। শরীরে এই রকম সমস্যা দেখা দিলে ১/১ গ্রাম চই গুঁড়া সকালে ও বিকালে দু'বার গরম পানিসহ খেলে উপকার পাওয়া যায়।
বিষাক্ত খাবার খেয়ে অসুস্থতা :
বিষাক্ত খাবার খেলে এর বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন : খুব পিপাসা পায়, হাতে-পায়ে খিল ধরে, বুক ধড়ফড় করে, শরীরে ঘাম হয়, মাথায় খুব যন্ত্রণা হয়। এই রকম লক্ষণ দেখা দিলে,,-১ গ্রাম চই গুঁড়া গরম পানিসহ ৩-৪ ঘন্টা পর পর দুই-তিনবার খেলে উপকার পাওয়া যায়।
মুখ দিয়ে পানি ওঠা :
যাদের মুখ দিয়ে প্রায়ই নোন্তা পানি ওঠে এবং বমির ভাব দেখা দেয়, তারা চই-এর ভেষজ চিকিৎসা নিতে পারেন। এজন্য প্রতিদিন ১-১ গ্রাম চই গুঁড়া দু'বেলা খাওয়ার পর অল্প গরম পানি দিয়ে খেলে এই সমস্যা কাটবে। সেই সাথে আমাশয়েরও উপশম হবে।
এই উপকারী চইগাছ আমাদের দেশ থেকে চিরতরে হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের একটু যত্ন আর ভালোবাসার জোরেই হয়ত এই চইগাছ বাড়ির আশেপাশে সহজেই বেড়ে উঠতে পারে। আসুন, আমরা সবাই দু’য়েকটি করে চইগাছ লাগাই, আর অসুখ-বিসুখে এগুলো কাজে লাগাই।

